Homeসব খবরজেলার খবরবৃষ্টি হলেই হতদরিদ্র মানিক সেকের ছাপড়া ঘরে পড়ে পানি!

বৃষ্টি হলেই হতদরিদ্র মানিক সেকের ছাপড়া ঘরে পড়ে পানি!

হতদরিদ্র মানিক সেক (৭৫)। একটু বৃষ্টি হলেই যার ঝুঁপড়ি ছাপড়া ঘর দিয়ে নামে বৃষ্টির পানি। প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে কোনোরকমে মাথা গুঁজেন সেখানে। কখনোবা বৃষ্টিতে ভিজে রাত কাটে তার।

ফরিদপুরের ভাঙ্গার গঙ্গাধরদী গ্রামের বাসিন্দা মানিক সেক। তিন ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে সংসার ছিল সুখের। কিন্তু ছেলে-মেয়ে বড় হয়ে যাওয়ায় যে যার মতো করে আলাদা সংসার পেতেছে। অভাবের তাঁড়নায় স্ত্রী মারা গেছেন বছর চারেক হলো। তাইতো একদিকে স্ত্রী হারানোর শোক অন্যদিকে বেঁচে থাকার সংগ্রাম যেন তাকে ধুঁকে ধুঁকে কুড়ে খাচ্ছে।

এই বিষয়ে মানিক সেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থার মধ্যে দিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। কখনো পাইনি কারো সাহায্য সহযোগিতা। থাকার একচালা টিনের ঘর দিয়ে পরছে পানি। মানিক সেক বলেন, ” বাজান, আমি ভাঙা ঘরে থাহি, আমারে এট্টা ঘর হরে (করে) দেনা বাপ। আল্লায় তোরে অনেক দিবে।”

স্থানীয় সোহাগ মাতুব্বর নামের এক ব্যাক্তি বলেন, মানিক সেকের দেহের প্রতিটি হাড় তার অভাবের সাক্ষী দিচ্ছে। এই অসহায় মানুষের পাঁশে যদি কেউ দাঁড়াত ও সাহায্য সহযোগিতা করতো তাহলে হয়তোবা বেঁচে থাকতে পারতো মানুষটা । সোহাগ বলেন, মানিক সেক এই পর্যন্ত পাইনি কোন বয়স্ক ভাতা বা সরকারি কোনো অনুদান। মাথা গোঁজার ঠাঁইটা দিয়েও পরেছে পানি। এই মূহুর্তে তার একটি ঘরের প্রয়োজন।

এই বিষয়ে মানিক সেকের পুত্র দেলোয়ার সেখ বলেন “পরিবারের সবার অভাব অনটনের মধ্যে সংসার জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে । জীবন যুদ্ধে যে যার সংসার চালাতে তারাই হিমশিম খাচ্ছেন। তাই তার বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য হয়তো আমরা দিতে পারবো। কিন্তু তার একটি ঘরের প্রয়োজন। এই বৃদ্ধ বয়সে আমার বাবার মাথা গোঁজার ঠাঁই-টা খুব বেশী প্রয়োজন।

ভাঙ্গার ঘারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো: শফিউদ্দিন মোল্যা বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নিজস্ব ২ শতাংশ জায়গা থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে মানিক সেকের দুই শতাংশ জায়গা থাকলে আমরা ইউএনওকে বলে তাকে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দিবো। তিনি বলেন, ওই বৃদ্ধার বয়স ৬৫ কিংবা উপরে হলে তাকে একটা বয়স্ক ভাতা করা দেওয়া হবে।

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া হতদরিদ্রদের জন্য প্রথমধাপের ঘর বিতরণ শেষ হয়েছে। তাইতো হতদরিদ্রদের জন্য দ্বিতীয় ধাপের ঘর যখন বরাদ্দের জন্য আসবে তখন তাকে ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, এছাড়া ওই বৃদ্ধাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।-সময়ের কণ্ঠস্বর

Advertisement