অবশেষে লঙ্কা জয় করলো টাইগাররা। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর অবশেষে শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়লাভ করলো বাংলাদেশ। আজ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১০৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এই জয়ের ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্রথমবারের মতো শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়লাভ করলো বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে ২৪৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন দলীয় অধিনায়ক এবং ওপেনার তামিম ইকবাল। উসুরু উদানার করা প্রথম ওভারেই তুলে নেন ১৫ রান।
কিন্তু দ্বিতীয় ওভারেই ছন্দ পতন। দুশমান্থ চামিরার প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ আবেদন নাকোচ করে দিলে রিভিউ নেন লঙ্কান অধিনায়ক কুশল পেরেরা। তাতেই প্রথম সফলতা পায় সফরকারীরা।
একই ওভারে দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট করতে নামা সাকিব আল হাসানকেও সাজঘরে ফেরান তিনি। আউট হওয়ার পূর্বে তামিম ১৩ রান করলেই রানেই খাতায় খুলতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
তৃতীয় উইকেটে দেখে-শোনেই খেলছিলেন লিটন। কিন্তু তাকে বেশিক্ষণে ক্রিজে থাকতে দেননি লাকসান সান্দাকান। ফিরেছেন ২৫ রানে। আর মোহাম্মদ মিঠুনের পরিবর্তে জায়গা পাওয়া মোসাদ্দেককে ১০ রানে ফেরান লঙ্কান স্পিনার সান্দাকান।
মাত্র ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে স্বাগতিকরা। দলের এমন অবস্থায় প্রথম ম্যাচের মতো আবারো হাল ধরেন মুশফিকুর রহমান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজন মিলে গড়েন ৮৭ রানের জুটি। আর তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত হয়ে যায়।
কিন্তু সান্দাকানের করা বল রিভারসুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাটের কোণায় লেগে কটবিহাইন্ড হন তিনি। আউট হওয়ার পূর্বে করেন ৪১ রান। এরপর ১০ রানে আফিফ এবং ১১ রানে সাইফউদ্দিন আউট হন। আর রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন মিরাজ ও শরিফুল।
শেষদিকে একাই লড়তে থাকা মুশফিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজে নবম সেঞ্চুরি তুলে নেন। শেস পর্যন্ত আউট ১২৭ বলে ১২৫ রান তুলে। দুর্দান্ত এই ইনিংসটি ১০টি চারে সাজানো।
বাংলাদেশের দেয়া ২৪৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই হয় সফররত শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ধারাবাহিকতা ছিল না তাদের ব্যাটে। শ্রীলংকার প্রথম উইকেট তুলে নেন অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম। দলীয় ২৪ রানের মাথায় অধিনায়ক কুশল পেরেরা কে ১৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন শরিফুল।
এরপর আরেক ওপেনার গুনালিথাকাকে ২৪ রানে আউট করেন মুস্তাফিজুর রহমান। আউট হন ২৪ রানে। দলীয় ৭১ রানের মাথায় বাংলাদেশকে তৃতীয় উইকেটে এনে দেন সাকিব আল হাসান। পাঠুম নিসঙ্কাকে বেশি রানের প্যাভিলিয়নে ফেরেন সাকিব।
দলীয় ৭৭ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কুশল মেন্ডিসকে ১৫ রানের প্যাভিলিয়নে ফেরান মিরাজ। দলীয় ৭৯ রানের মাথায় নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন সাকিব। ধনঞ্জয় ডি সিলভাকে ১০ রানেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
তবে এর পরে জোড়া উইকেট তুলে নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দাসুন শানাকাকে ১১ এবং গত ম্যাচে বিধ্বংসী ব্যাটিং করা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মেহেদী হাসান মিরাজের পথচলা উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজুর রহমান।
দলীয় ১১৬ ধনের মাথায় ব্যক্তিগত দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। আশেন বান্দারাকে ১১ রানের প্যাভিলিয়নে ফেরেন মুস্তাফিজ। এর পরের ওভারে ৪ রান করা লাকশান সান্দাকানকে প্যাভিলিয়নে ফেরান মুস্তাফিজ। তবে এরপর শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টির আইনে শ্রীলংকার টার্গেটে দাঁড়ায় ৪০ ওভারে ২৪৫ রান। নির্ধারিত ৪০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের হয়ে ২৮ রানে তিনটি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৬ রানের বিনিময়ে মুস্তাফিজ নেন ৩ উইকেট। এছাড়াও সাকিব-আল-হাসান দুইটি এবং শরিফুল ইসলাম নেন একটি উইকেট। দুই দলের মধ্যকার তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ২৮ মে।