Homeঅন্যান্যবাড়ির আঙিনা বা ছাদে ১২ মাস জুড়ে এই পদ্ধতিতে...

বাড়ির আঙিনা বা ছাদে ১২ মাস জুড়ে এই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করলে ফলন হবে বাম্পার

আমাদের দেশে তরমুজ একটি জনপ্রিয় ফল। তরমুজের ভেতরের মাংসল অংশ বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু। চাষিরা তরমুজ চাষে বেশ লাভবান হন। আসুন আমরা তরমুজ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানব। সেইসাথে চাষ শুরু করবেন কিভাবে সেটিও জানাব।

তরমুজের জাত: তরমুজের আধুনিক জাতসমূহের মধ্যে টপইল্ড, গ্লোরী, সুগার বেবি, বেবি তরমুজ (বারোমাসি), ( ভিক্টর সুপার F1, ওসেন সুগার F1, ব্লাক জায়ান্ট F1,বঙ্গ লিংক F1, গ্রীন ড্রাগন ইত্যাদি) জাতগুলো নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বপন করা যাবে। এগুলো ভাদ্র থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত চাষ করা যায়।

বংশ বিস্তার: বীজ দ্বারা সাধারণত তরমুজের বংশবিস্তার করা হয়ে থাকে। বীজ বপন সময়/রোপণের সময় বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী সাধারণত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময় তরমুজ চাষের উপযোগী। এছাড়াও আগাম কিছু জাত আছে যেগুলো নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বপন করা যাবে। তবে বীজ বোনার জন্য জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম পক্ষ সর্বোত্তম। আগাম ফসল পাওয়ার ক্ষেত্রে জানুয়ারির শুরুতে বীজ বুনলে শীতের হাত থেকে কচি চারা রক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে।

বীজ বপনসাধারণত প্রতি মাদায় ৪-৫টি বীজ বপন করা হয়। বপনের ৮-১০ দিন আগে মাদা তৈরি করে মাটিতে সার মিশাতে হয়। দু মিটার দূরে দূরে সারি করে প্রতি সারিতে দু মিটার অন্তর মাদা করতে হয়। প্রতি মাদা ৫০ সেমি. প্রশস্ত ও ৩০ সেমি. গভীর হওয়া বাঞ্চনীয়। চারা গজানোর পর প্রতি মাদায় দুটি করে চারা রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলতে হবে।

চারা রোপণবীজ বপণের চেয়ে তরমুজ চাষের জন্য চারা রোপণ করা উত্তম। এতে বীজের অপচয় কম হয়। চারা তৈরির জন্য ছোট ছোট পলিথিনের ব্যাগে বালি ও পচা গোবর সার ভর্তি করে প্রতি ব্যাগে একটি করে বীজ বপন করা হয়। ৩০-৩৫ দিন বয়সের ৫-৬ পাতাবিশিষ্ট একটি চারা মাদায় রোপণ করা হয়।বীজের পরিমাণপ্রতি হেক্টরে ৮৫০-১ হাজার গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়।

পোকামাকড় ও রোগবালাই পাতার বিটল পোকা প্রথম দিকে পোকাগুলোর সংখ্যা যখন কম থাকে তখন পোকা ডিম ও বাচ্চা ধরে নষ্ট করে ফেলতে হবে। পোকার সংখ্যা বেশি হলে রিপকর্ড/সুমিথিয়ন/ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি ১ মিলি/লিটার মাত্রায় সপ্তাহান্তে স্প্রে করতে হবে। জাব পোকাএ পোকা গাছের কচি কাণ্ড, ডগা ও পাতার রস শুষে খেয়ে ক্ষতি করে।

এ পোকা দমনের জন্য সুমিথিয়ন/ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি ২ মিলি/লিটার মাত্রায় স্প্রে করতে হবে। ফিউজেরিয়াম উইল্ট রোগএ রো’গের আ’ক্রমণে গাছ ঢলে পড়ে মারা যায়। নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করা হলে এ রো’গের প্রকোপ কম থাকে। রোগা’ক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেরতে হবে। ফসল সংগ্রহজাত ও আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে তরমুজ পাকে।

সাধারণত ফল পাকতে বীজ বোনার পর থেকে ৮০-১১০ দিন সময় লাগে। তরমুজের ফল পাকার সঠিক সময় নির্নয় করা একটু কঠিন। কারণ অধিকাংশ ফলে পাকার সময় কোনো বাহ্যিক লক্ষণ দেখা যায় না। তবে নীচের লক্ষণগুলো দেখে তরমুজ পাকা কি না তা অনেকটা অনুমান করা যায়।ফসল সংগ্রহ:ফলের বোঁটার সঙ্গে যে আকর্শি থাকে তা শুকিয়ে বাদামি রং হয়।

খোসার উপরে সূক্ষ লোমগুলো মরে পড়ে গিয়ে তরমুজের খোসা চকচকে হয়। তরমুজের যে অংশটি মাটির ওপর লেগে থাকে তা সবুজ থেকে উজ্জল হলুদ রংঙের হয়ে ওঠে।তরমুজের শাঁস লাল টকটকে হয়। আঙ্গুল দিয়ে টোকা দিলে যদি ড্যাব ড্যাব শব্দ হয় তবে বুঝতে হবে যে ফল পরিপক্কতা লাভ করেছে। অপরিপক্ব ফলের বেলায় শব্দ হবে অনেকটা ধাতবীয়। ফলনসযত্নে চাষ করলে ভালো জাতের তরমুজ থেকে প্রতি হেক্টরে ৫০-৬০ টন ফলন পাওয়া যায়।

Advertisement