Homeসব খবরজেলার খবরপর্যটকশূন্য সৈকতে ফিরেছে সাগরলতা

পর্যটকশূন্য সৈকতে ফিরেছে সাগরলতা

সারি সারি সাগরলতা কুয়াকাটা সৈকতের বালিয়াড়িতে ছড়িয়ে গেছে। রমজানের শুরু থেকেই পর্যটকশূন্য সাগরকন্যা কুয়াকাটা। ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা না থাকায় নির্জন সৈকতের বালিয়াড়ি দখলে নিয়েছে সবুজ কার্পেটের আদলে সাগরলতা।

সাগরলতার বৈজ্ঞানিক নাম Ipomoea pes-caprea। এটি Convolvulaceae গোত্রের উদ্ভিদ। সাগরলতা অতি খরা সহনশীল একটি উদ্ভিদ। সাগরলতাকে স্থানীয়রা কেউ কেউ ‘গোস্তলতা’ আবার কেউ কেউ ‘ডাউঙ্গালতা’ কিংবা ‘গঙ্গালতা’ বলে চেনেন।

দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে জন্ম নিয়েছে ‘রেলরোড ভাইন’ নামের এ চমৎকার উদ্ভিদ।সৈকতের বেলাভূমির কোথাও কোথাও ফুটেছে সাগরলতার ফুল। বালিয়াড়ির গহীনে ছড়িয়ে গেছে এর শেকড়। শুকনো বালুর বুকে ঘটেছে সবুজের বিপ্লব। রমজানের আগে কোথাও ছিল না এমন মনজুড়ানো দৃশ্য। সাগরলতা বেড়ে উঠছে তপ্ত শুকনো বালুতে।

জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর কুয়াকাটায় বৃদ্ধি পায় পর্যটকদের সংখ্যা। ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনায় পদভারে হারিয়ে যায় এ লতাগুলো। কিন্তু পুরো রমজান মাসে পর্যটক না থাকায় আবারও সৈকতজুড়ে দেখা যাচ্ছে সাগরলতা।

সৈকতের বেলাভূমি আকড়ে ধরা লতাগুলো সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস থেকে সমুদ্রতীর রক্ষ করে। ফলে কিছুটা হলেও ভাঙন থেকে রক্ষা পায় উপকূলের বেলাভূমি। সৈকতে মাটির ক্ষয়রোধ এবং শুকনো উড়ন্ত বালুরাশিকে আটকে বালিয়াড়ি তৈরির প্রধান কারিগর এই সাগরলতা।

গঙ্গামতি এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জানান, ‘আগে পুরো সৈকতে সাগরলতা রাজত্ব করেছে। কুয়াকাটায় পর্যটক আসতে শুরু করায় আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে এ উদ্ভিদ। করোনাকালীন কিছু কিছু জায়গায় সাগরলতা জন্ম নিয়েছিল। পরে পর্যটকদের পদচারণায় বর্ষা মৌসুমের অস্বাভাবিক ঢেউয়ের ঝাপটায় হারিয়ে গেছে। এখন আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।’

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রশিদ ভূঞা বলেন, ‘সাগরলতা হলো সৈকতের সুস্থতার পরিচায়ক। এগুলো বালু ধরে রেখে বালিয়াড়ি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। মানুষের অতি আনাগোনায় সাগরলতা হারিয়ে যায়। তাই সৈকতের সুস্থতা ধরে রাখতে হলে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে।’

Advertisement