Homeসব খবরজেলার খবরদুবাই গেল বরেন্দ্র অঞ্চলের ১৪ মেট্রিক টন পেয়ারা

দুবাই গেল বরেন্দ্র অঞ্চলের ১৪ মেট্রিক টন পেয়ারা

জেলার নাচোল উপজেলার কেন্দুয়া এলাকায় বিশাল পেয়ারা বাগান গড়ে তুলেছেন রফিকুল। এই বাগানের উৎপাদিত পেয়ারা বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলামের বাগান থেকে ১৪ মেট্রিক টন পেয়ারা গেল দুবাইতে। তিনি গ্যালাক্সি ফ্রেশ প্রোডাক্ট লিমিটেডের মাধ্যমে পেয়ারা দুবাইতে রপ্তানি করছেন।

রপ্তানিযোগ্য হওয়ায় গ্যালাক্সি ফ্রেশ প্রোডাক্ট লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগ করে পেয়ারা দুবাইতে পাঠানোর সিন্ধান্ত নেয়। বালাইশানক পরীক্ষা করে ফলাফল অনুকূলে থাকায় দুবাইতে রপ্তানি করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ২৩-২৫ দিনের মধ্যে পেয়ারা দুবাইয়ে পৌঁছে যাবে। কৃষি উদ্যোক্তা রফিকুলের বাগানের পেয়ারা স্বাদে অতুলনীয়।

কৃষি উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে বাগান থেকে ৮ হাজার কেজি পেয়ারা দুবাইতে রপ্তানি করা হয়েছে। তখন দেশের বাজারে পেয়ারার প্রতি মণ মাত্র ১৪০০ টাকা, কিন্তু বিশ্ববাজারে এই পেয়ারার দাম ২৩০০ টাকা মণ। দুবাইতে আগে থেকে যেসব দেশের পেয়ারার মার্কেট আছে, তাদের চেয়ে আমাদের দেশের পেয়ারার চাহিদা বেশি। আমাদের দেশের উৎপাদিত পেয়ারার সুমিষ্টতার কারণে দুবাইয়ের নাগরিকরাও এই পেয়ারা খেতে পছন্দ করে। দুবাইতে অন্যান্য দেশের পেয়ারার চেয়ে আমাদের পেয়ারা বেশি দামে বিক্রি হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনও অনালগ পদ্ধতিতে পেয়ারা চাষাবাদ থেকে শুরু করে সব কাজ করে থাকি। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামে পেয়ারা চাষের আনুষঙ্গিক কাজ মেশিনের মাধ্যমে করে। তারা পাকেজিংও করে মেশিনের সাহায্যে। তবুও আমরা দেশের পেয়ারা ব্র্যান্ডিং করতে পেরেছি। আমাদের মতো কৃষকদের যথাযথ ট্রেনিং দিয়ে সাহায্য করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব। ব্যবসায়ীদের পেয়ারা রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা পেলে অন্য দেশের চেয়ে বেশি এগিয়ে যাব।’

গ্যালাক্সি ফ্রেশ প্রোডাক্ট লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার হেমায়েত হোসাইন শিপলু বলেন, ‘আমরা যখন একটা বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করি, সব কিছু খেয়াল রাখি। পেয়ারাতে দাগ থাকা যাবে না, পোকা মাকড় থাকা যাবে না, পেয়ারার গাঁ থেকে ছাল উঠে গেলে সেই পেয়ারা নেব না। আমরা সব সময় সুন্দর আর টেস্টি পেয়ারা বিদেশে রপ্তানি করে থাকি। এই পেয়ারা সরাসরি দুবাইয়ের শপিংমলে সরবরাহ করি। আমরা দুবাইতে চড়ামূল্যে এই পেয়ারা বিক্রি করছি। আগামীতে সেখানে পেয়ারার দাম আরও বাড়বে।’

জেলা কৃষি অ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মালিক বলেন, ‘দেশে আমের পাশাপাশি পেয়ারাও বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশ থেকে পেয়ারা বিশ্ববাজারে রপ্তানি হচ্ছে, এটা সম্ভাবনাময়। আমাদের জেলায় এখন অনেক পেয়ারার বাগান, এই কারণে বাগান মালিকরা ন্যায্যমূল্য পান না। বিদেশে রপ্তানি করলে পেয়ারার ন্যায্য দাম পাবে বাগান মালিকরা। পেয়ারার প্রসেসিং করা গেলে খুব বেশি পরিমাণে বাগানে নষ্ট হবে না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘এই উপজেলায় উৎপাদিত ১৪ মেট্রিক টন পেয়ারা বিদেশে যাচ্ছে, এটা খুশির খবর। কৃষি দপ্তরের আশা, আমাদের দেশে উৎপাদিত সকল পণ্যই বিদেশে যাক, তাহলে কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবে এবং চাষাবাদেও আগ্রহ বাড়বে। দেশের পেয়ারা চাষের পদ্ধতি ও কৌশল অন্যান্য দেশের থেকে একদম আলাদা। সেই জন্য দেশের পণ্যের মান ও গুণের দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে। বিদেশে আমাদের কৃষি পণ্যের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।’

চাষিদের যথাযথ প্রশিক্ষণ, ল্যাব টেস্টের বিড়ম্বনার বিষয়ে তিনি বলেন, বিদেশে রপ্তানির জন্য আমের জন্য রপ্তানি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। পেয়ারার জন্য নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ওয়াটার হট টিটমেন্টের মাধ্যমে পেয়ারা সংরক্ষণ করা যায়। চাষিরা পেয়ারা সংরক্ষণের জন্য এই পদ্ধতিতে কাজে লাগাতে পারেন। দেশে ১৪টা রিজিওন আছে, সেগুলোতে ল্যাব নির্মাণ করা হবে এবং প্যাকিজিং হাউজ চালু করা হবে।

Advertisement