Homeসব খবরজেলার খবরদিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কাঁকড়া চাষ

দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কাঁকড়া চাষ

বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার কাঁকড়া ঘেরে কয়েক হাজার মৎস্য চাষিরা জীবিকা নির্বাহ করছেন। এজেলায় অনুকূল পরিবেশের কারণে দিন দিন কাঁকড়া চাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বরগুনা জেলার মৎস্য চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। বিগত ১৫ বছর যাবত এই অঞ্চলে কাঁকড়ার চাষে প্রসার লাভ করেছে।

বরগুনা জেলার আমতলী, পাথরঘাটা, তালতলী উপজেলায় বেশীরভাগ কাঁকড়া ঘের গড়ে উঠলেও বামনা, বেতাগী ও বরগুনা সদরের মৎস্য চাষিরাও আগ্রহভরে কাঁকড়া চাষ শুরু করেছেন। আমতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়ার মনির গাজী বলেন, আমার বড় সাইজের ডোবা সাদৃশ্য পুকুরকে মাঝ বরাবর চাটাইয়ের বেড়া ও মশারীর জাল দিয়ে দুই ভাগ করেছি। এক অংশে মাছ ও অপর অংশে কাঁকড়ার চাষ করি। এখনকার কাঁকড়া খুলনা ও বাগেরহাটে চালান করা হয়। পুকুর পাড়ে খুব শক্ত ও ভাল বেড়ার প্রয়োজন পড়ে। তানাহলে কাঁকড়াগুলো হেটে হেটে চলে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমি প্রথম ব্যাক্তি হিসেবে বিগত ১৫ বছর যাবত গলদা ও বাগদা চিংড়িসহ সাদা মাছের আড়তদারী করছি। স্থানীয় জেলেদের থেকে কাঁকড়া কিনে খুলনা, বাগেরহাট চালান দিতাম। কিন্তু যথা স্থানে যেতে যেতে অনেক কাঁকড়া দূর্বল হয়ে পড়তো আবার অনেকগুলো মারাও যেত। এখন খুব বেশি কাঁকড়া মারা যায় না। কাঁকড়ার নাসিং শুরু করি।

কাঁকড়া চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি পাথরঘাটায় কয়েক বছর আগে ৩ একর জায়গা ইজারা নিয়ে কাঁকড়া চাষ শুরু করি। স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে কাঁকড়া সংগ্রহ করে ঘেরে তা বড় করা হতো। কাঁকড়ার খাবার হিসেবে বাজার থেকে ছোট মাছ কিনে খাওয়ানো হয়। প্রায় ৪১ দিন পর সেই কাঁকড়া ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের হয়। দেড় মাসে ৫০ হাজার টাকা খরচে প্রায় লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। বারোমাসই এই ব্যবসা করা যায়।

চাষিরা বলেছেন, মৎস্য আহরন ও ধান চাষের চেয়ে বেশি লাভবান হওয়া যায় কাঁকড়া চাষ করে। তাই অনেক চাষিরা কাঁকড়া চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

মৎস্য দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জগদিশ চন্দ্র বসু জানিয়েছেন, বরগুনাতে কাঁকড়া মোটাতাজা করণ ও প্রজননের উপযোগী পরিবেশ রয়েছে। ভার্দ্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত জেলেদের জালে প্রচুর কাঁকড়ার বাচ্চা ধরা পড়ে এবং অহেতুক মারা পড়ে। মনির গাজীর সাফল্য দেখে ঐএলাকার শতাধিক উদ্যোগী মানুষ কাঁকড়া চাষ শুরু করেছেন। সেগুলোকে মোটতাজাকরণের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন সম্ভব।

কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল বলেন, কাঁকাড়া চাষ লাভজনক। কাঁকড়া চাষে অনেকেই সফল হয়েছেন। আরো অনেক চাষিরা কাঁকড়া চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরদার মহিউদ্দিন বলেন, কাঁকড়া চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Advertisement