Homeসব খবরজেলার খবরঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টার ক্ষেতে ঝিঙের চাষ, স্বল্প খরচে অধিক লাভ

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টার ক্ষেতে ঝিঙের চাষ, স্বল্প খরচে অধিক লাভ

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের বিরাশি গ্রামের ৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে ঝিঙা। আর সেই ফসলের খুঁটি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ভুট্টার গাছ। গাছ থেকে ভুট্টা তোলা শেষে জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা ডাঁটায় সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে হলদে ফুল। সবুজ পাতা আর হলদে ফুলের মাঝে জড়িয়ে আছে ঝিঙে আর ঝিঙে।  বাণিজ্যিকভাবে ঝিঙে আবাদে লতাপাতা যাতে মাটিতে গড়াগড়ি না খায় সেজন্য এতদিন বাঁশের কন্চি বা বাঁশের তৈরী খুটি ব্যবহার করা হতো। এতে ঝিঙে আবাদের খরচ বেড়ে যেত। খরচ কমিয়ে আনতে এবার খুটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ভুট্টার ডাঁটা।

জানা গেছে, দুই শতাধিক কৃষক ৬০ হেক্টর জমিতে অভিনব এ পদ্ধতি ব্যবহার করে খরচ কমিয়ে ফেলেছেন। স্বল্প খরচে এক জমিতেই দুই ফসলের আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। বিরাশি গ্রামের কয়েকজন ঝিঙে চাষী জানান, ভুট্টার ক্ষেতে এক দেড় মাসের মধ্যে ভুট্টা গাছের পাশে ঝিঙের বীজ রোপন করা হয়। ভূটার সেচ আর পরিচর্যায় ভূট্রার পাশাপাশি ঝিঙের গাছও বড় হতে থাকে। ভুট্টার মোচা গাছ থেকে ভেঙ্গে নেওয়ার পর গাছ পরিত্যক্ত অবস্থায় থেকে যায় জমিতে। পরে ভুট্রা ডাঁটা ঝিঙের খুটি হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এতে অতিরিক্ত সার বা সেচ কোনটাই লাগেনা। শুধু মাত্র পোকামাকড় দমনে স্প্রে করা হয় কীটনাশক।

কৃষকরা আরও জানান, গত চার বছর ধরে ভুট্টার সাথি ফসল হিসেবে ঝিঙে আবাদ করার ফলে এক খরচেই দুটি ফসল পাওয়া যাচ্ছে। ঝিঙে চাষের জন্য আলাদা কোনো খরচ লাগছে না। ফলে ওই পদ্ধতিতে ঝিঙে চাষ করে একদিকে যেমন পরিবারের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, অন্যদিকে বাজারে বিক্রি করে বেশ আয়ও হচ্ছে।

একই গ্রামের কৃষক আকতার হোসেন বলেন, ‘ভুট্টা চাষের পর আমরা আগাম আলু চাষি করি। এবার কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে ভুট্টার ডাঁটায় ঝিঙে চাষ শুরু করেছি। এ পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকার ঝিঙে বিক্রি করেছি। ভুট্টা তুলে নেওয়ার পরে এবং আলু রোপনের জমি প্রস্তুত করার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত জমি থেকে ঝিঙে তুলে বাজারে বিক্রি করা যায়। ওই গ্রামের কৃষক সামসুল আলম এবার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ভুট্টার সঙ্গে ঝিঙে আবাদ করেছেন। তিনি প্রায় ৬০ মণ ঝিঙে পেয়েছেন। আরো রয়েছে জমিতে। এযাবৎ বিক্রি করে পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা।

রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, বাংলাদেশের একমাত্র রাণীশংকৈল উপজেলায় ভুট্টার ডাঁটা ঝিঙের খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। লেহেম্বা ব্লকের বিরাশিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ৬০ হেক্টর জমিতে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ মণ ঝিঙে তুলে বাজারজাত করছে চাষিরা। আমরা কৃষকদের পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।

Advertisement