Homeসব খবরক্রিকেটচিন্তাও করিনি ম্যাচটা হারবো : মুমিনুল

চিন্তাও করিনি ম্যাচটা হারবো : মুমিনুল

চট্টগ্রাম টেস্টের ফলটা বাংলাদেশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজরা। শেষদিনে মায়ার্সের অতিমানবীয় ব্যটিংয়ের কাছে হার মেনেছে স্বাগতিকরা। এমনটা হবে ভাবতেই পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। ম্যাচ শেষেও তার চোখেমুখে ঘোর। মুমিনুল বলেন, আসলে অবিশ্বাস্য। ক্রিকেট যেহেতু গোল বলের খেলা, অবিশ্বাস্য অনেককিছুই হয়ে যায়। প্রত্যাশা করিনি এমন কিছু হবে। কোন সময়ই আমার মনে হয়নি আমরা হারবো। কারণ ৪দিন আমরা ডমিনেট করেছি। মনেই হয়নি শেষের দিকে এসে আমরা হেরে যাবো। আমার কাছে মনে হয় বোলাররা ভালো জায়গায় বল করতে পারেনি। ওদের ব্যাটসম্যানরা ভালো ব্যাটিং করেছে।

তবে হারের জন্য নির্দিষ্ট কারো কাঁধে দোষ চাপাতে রাজি নন অধিনায়ক। দায়টা পড়ুক পুরো দলের কাঁধেই। মুমিনুল হক বলেন, টিম হারা মানে পুরো দলের হারা। এখানে আপনি একক কোন ব্যক্তির দোষ দিতে পারেননা। টিম হারা মানে সবাই হারা, জেতা মানে সবাই জেতা। ইনজুরিতে পড়ে ৩য় ও ৪র্থ ইনিংসে ব্যাটিং-বোলিং কোনটিই করতে পারেননি তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সমর্থকদের মতো অধিনায়কেরও মনে হয়, সাকিব থাকলে ম্যাচের ফলাফলটা অন্যরকম হতেও পারতো!

টেস্ট অধিনায়ক বলেন, সাকিব ভাই থাকলে বোলিংটা একটু গোছানো হতো। উনি যেহেতু সিনিয়র বোলার, সবাইকে আগলে রাখতে পারতো। উনি থাকলে আমার জন্য কাজটা একটু সহজ হতো। ওনাকে অবশ্যই মিস করেছি। ক্যাপ্টেন হিসেবে ওনাকে আগে পাইনি। এবারই প্রথম পেলাম। উনি ছাড়াও যারা ছিল, নাঈম-তাইজুল-মিরাজ ওরাও ক্যাপাবল ছিল ম্যাচ জেতানোর জন্য। মোস্তাফিজও ছিল। একটু ভালো লেংথে বল করতে পারলে আসলে ম্যাচটা জেতা যেত।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয় পেয়েছে, যা কিনা এশিয়ার মাটিতে সর্বোচ্চ। তাও আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে। অভিষিক্ত কাইল মায়ার্সের ইতিহাস গড়া অপরাজিত ২১০ রানের ইনিংসে বাংলাদেশকে লজ্জায় ফেলে চট্রগ্রাম টেস্ট তিন উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে সফরকারী ওয়েস্ট।

এই বাঁহাতি মায়ার্স তুলে নেন অভিষেকে প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ত্রিকেটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি। আর বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরিরও ইতিহাস গড়েন মায়ের্স। দ্বিতীয় ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করা ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান মায়ার্স। দলকে জিতিয়ে মায়ের্স অপরাজিত থাকেন ২১০ রানে।

উইন্ডিজদের জয়ের ভিত গড়ে দেয় মায়ের্স বোনার জুটি। বোনারের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তিনি যোগ করেন ৪৪২ বলে ২১৬ রান। পঞ্চম দিনের প্রথম দুই সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের একরাশ হতাশা উপহার দেন তারা। চা-বিরতি পর্যন্ত তাই উইকেটবিহীন কাটাতে হয় স্বাগতিকদের। এই জুটির কল্যাণে ম্যাচে চালকের আসনে থাকে সফরকারীরা। চা বিরতির পর বোনার ফিরলেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মায়ার্স।

টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ জুটি ছিল ১৩৪ রানের। ২০০৩ সালে পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ ও ইয়াসির হামিদ বাংলাদেশের বিপক্ষেই করাচিতে রেকর্ড গড়েছিলেন। ১৮ বছর পর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওই কীর্তি ভেঙে নিজেদের করে নিয়েছেন বোনার ও মায়ার্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা দুই ক্রিকেটারের আগের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়া হয়েছিল ১৯৩০ সালে। জর্জ হ্যাডলি ও ফ্রাঙ্ক ডি কেয়ার্স ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বার্বাডোজে যোগ করেছিলেন ১২৪ রান। সেটা অনেক আগেই পেরিয়ে যান বোনার ও মায়ার্স। তাদের সামনে ছিল আরও একটি রেকর্ডের হাতছানি।

এদিকে, ১৯৬৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করাচিতে পাকিস্তানের খালিদ ইবাদউল্লাহ ও আব্দুল কাদির গড়েছিলেন ২৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। যেকোনো উইকেটে দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। এতদিন একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরির জুটিও ছিল সেটি। বোনার ও মায়ার্স তাতে ভাগ বসিয়েছেন। কিন্তু ২১৬ রানে জুটি থামায় নতুন রেকর্ড গড়া হয়নি তাদের। তবে রেকর্ড গড়া না হলেও ঠিকই রেকর্ড গড়ে জিতেছে উইন্ডিজরা।

Advertisement