Homeসব খবরজেলার খবরঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানি বেড়ে উপকূলীয় ১৪ জেলায়...

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানি বেড়ে উপকূলীয় ১৪ জেলায় প্লাবিত হয়েছে

বাংলাদেশে আর আঘাত হানার আশঙ্কা না থাকলেও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানি বেড়ে উপকূলীয় ১৪ জেলায় প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। এসব জেলার ২৭ উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

বুধবার সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১৪ জেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব পড়েছে বলে আমরা জেনেছি।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় ৯টি জেলার ২৭টি উপজেলার ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে ১৬ হাজার ৫০০ শুকনা ও নরম খাবারের প্যাকেট জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এগুলো বিতরণের কার্যক্রম চলবে।

ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- শ্যামনগর, আশাশুনি, কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, শরণখোলা, মোংলা, মোরেলগঞ্জ, মঠবাড়িয়া, বরগুনা সদর, পাথরঘাটা, আমতলী, পটুয়াখালী সদর, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, দশমিনা, মির্জাগঞ্জ, কলাপাড়া, চরফ্যাশন, মনপুরা, তজুমদ্দিন, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, ভোলা সদর, হাতিয়া, রামগতি ও কমলনগর।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পটুয়াখালী জেলায় জোয়ারের পানি বিপৎসীমার নিচে আছে। সেখানে কোনো ঝড়বৃষ্টি নেই। ১৭২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৪ হাজার মানুষ আশ্রয় নিলেও তারা এখন নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন।

তিনি জানান, সাতক্ষীরায় জোয়ারের পানি ৩ থেকে ৬ ফুট উঁচুতে প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েকটি বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষ নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন। বরগুনায় জোয়ারের পানি ২ থেকে ৩ ফুট উঁচুতে রয়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা ৫২০ জন বাড়িতে ফিরে গেছেন। সামান্য বৃষ্টি থাকলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি নেই।

প্রতিমন্ত্রী জানান, ঝালকাঠিতে পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। পিরোজপুরে জোয়ারের পানি ৩ ফুট উঁচুতে রয়েছে। এখানে পানির তোড়ে মাছের ১০ থেকে ১২টি ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজিবাগান। বরিশালে তেমন ক্ষয়ক্ষতি নেই। ভোলায় ঝড় হয়েছে। পানি ২ থেকে ৩ ফুট ওপরে উঠলেও তা এখন নেমে গেছে। কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে ২৫০টি। পানিতে ভেসে গেছে ৯০০ গরু-মহিষ। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা ২ হাজার মানুষ বাড়ি ফিরে গেছেন।

তিনি জানান, বাগেরহাটে তিনটি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি আছে, তবে স্বাভাবিক। চাঁদপুরে রোদ ছিল। কোনো ক্ষয়ক্ষতি নেই। লক্ষ্মীপুরে সামান্য জোয়ারের পানি আছে। খুলনায় ক্ষয়ক্ষতি নেই। জোয়ারের পানি নেমে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজন বাড়ি ফিরে গেছেন।

ফেনীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ঝড়ে ট্রলার ডুবে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। চট্টগ্রামে পানি বাড়ছে, তবে ক্ষয়ক্ষতি নেই। নোয়াখালীতে জোয়ারের পানি ৪ ফুট পর্যন্ত উঁচুতে উঠলেও পরে সেটি নেমে গেছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে থেকেই জেলা প্রশাসকদের কাছে খাদ্য ও অর্থ দেয়া আছে। তারা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। ২৭টি উপজেলায় ১৬ হাজার ৫০০ শুকনা খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ রয়েছে।

Advertisement