Homeসব খবরবিনোদনএকরে খরচ ৬ হাজার টাকা, ঘরে উঠছে ৭৫ হাজার

একরে খরচ ৬ হাজার টাকা, ঘরে উঠছে ৭৫ হাজার

প্রতি বিঘায় প্রায় সাত মণ ফলন হয়েছে। এমন ফলন গত কয়েক বছরের মধ্যে বেশি বলে জানান তিনি। বাজারে প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করছেন ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় মণে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা বেশি। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন এই কৃষক। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের কাথুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হক। চলতি বছর প্রায় দুই একর জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছিলেন। আব্দুল হকের মতো একই ইউনিয়নের শাহিন প্রামাণিক, সেলিনা পারভীন ও রেজাউল ইসলাম সরিষা আবাদ করে ভালো ফলন ও দাম পেয়ে খুশি।

সেলিনা খাতুন বলেন, সরকারিভাবে এবার কৃষকদের প্রণোদনা বাড়ানো হয়েছে। তিন একর জমিতে বারি-১৪ জাতের উচ্চফলনশীল সরিষা আবাদ করেছেন। প্রতি একরে ৬ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। তিনি একরপ্রতি ২১ মণের কাছাকাছি সরিষা পেয়েছেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৭৫ হাজার টাকা।

আব্দালপুর ইউনিয়নের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, সরিষায় রোগবালাই এমনিতেই কম। এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ভালো। বাজারেও ভালো দাম। তিনি জানান, সারাবছরের খাওয়ার সরিষা বাড়িতে রেখে বাকিটা বাজারে বিক্রি করে অন্য চাষাবাদ করবেন।

রুহুল আমিন বলেন, আমন ধান কাটার পর সাধারণত জমি খালি পড়ে থাকে। এ সময়টায় এবার গ্রামের প্রায় সব কৃষক সরিষা আবাদ করেছেন। সরিষার অর্থে বোরো ধান আবাদ করা সহজ হবে কৃষকদের। পাশাপাশি তেলের চাহিদা পূরণ হবে প্রায় প্রতি পরিবারে।

জানা গেছে, কুষ্টিয়ায় বারি ১৪, ১৭, ১৮ ও বিনা ৯ জাতের সরিষায় রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। যেখানে সাধারণত বিঘাপ্রতি গড়ে চার-পাঁচ মণ ফলন হয়, এবার সেখানে সাত মণের কাছাকাছি ফলন পেয়েছেন তাঁরা। মাত্র দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ করে ৬০-৭০ দিনের মধ্যে প্রতি বিঘায় আয় হচ্ছে প্রায় ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরিষা গাছ কেটে একই জমিতে বোরো আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। যাঁরা আগেভাগে সরিষা চাষ করে ফসল ঘরে তুলেছেন, তাঁরা জমি প্রস্তুত করে বোরো চারা রোপণ করেছেন। সরিষা আবাদ করে যে অর্থ পেয়েছেন, তা কৃষকদের বোরো আবাদে সহায়ক হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, সরকার থেকে বীজ ও সার দেওয়ায় সরিষা চাষে কৃষকদের তেমন খরচ করতে হয়নি। প্রতি বিঘায় সাত মণের কাছাকাছি ফলন পেয়েছেন তাঁরা, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৫ হাজার টাকা। যারা বেশি যত্ন করেছেন, তাদের ফলন আরও বেশি হয়েছে। একই সঙ্গে সরিষা উৎপাদন বাড়ায় বাজারে সয়াবিনসহ অন্য তেলের ওপর এবার চাপ কমবে বলে মনে করেন তিনি। নামমাত্র খরচে কৃষকরা ভালো লাভ করতে পারছেন।

Advertisement