Homeসব খবরআন্তর্জাতিকইসলাম গ্রহণের পর রমজানে প্রথম রোজা রাখার অনুভূতি

ইসলাম গ্রহণের পর রমজানে প্রথম রোজা রাখার অনুভূতি

সাধারণত শৈশব থেকে শুরু হয় রমজানের রোজার স্মৃতি। পাঁচ-ছয় বছর থেকে অনেকে পরিবারে শিশুদের রোজা রাখায় অভ্যস্ত করা হয়। অর্ধদিন, একদিন বা দুইদিন করে শিশুরা রোজা রাখার চেষ্টা করে। তবে রোজার বিষয়টি শিশুদের মধ্যে পুরোপুরি পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে তৈরি হয়। কিন্তু একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তি ইসলামগ্রহণের পর তাঁর রোজার অনুভূতি কেমন হয়?

নেদারল্যান্ডে বসবাসকারী বাসকালা ২০১৮ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন। একজন বিমানবালা হিসেবে তাঁর জন্য রোজা রাখা বেশ কঠিন ছিল। তাদুপরি তিনি কয়েক দিন বাদে পুরো রমজান রোজা রেখেছেন। বাসকালা বলেন, ‘আমার রোজার প্রথম বছরটি ছিল খুবই কঠিন ছিল। তখন আমি নেদারল্যান্ডে বসবাস করি। পেশায় একজন বিমানবালা হিসেবে কাজ করছিলাম। তাই অধিকাংশ সময় দীর্ঘ বিমান যাত্রায় থাকতে হতো। অতঃপর কোনো বিমানবন্দরে বিমান অবতরণ হলেও ততক্ষণে হোটেলও বন্ধ হয়ে যেত। ফলে সাহরির ‍সুযোগ হতো না। এরপরও প্রায় পুরো মাস রোজা রেখেছিলাম।’

রোজার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাসকালা আরো বলেন, ‘আমি একটি ক্যাথলিক স্কুলে পড়তাম। সেখানের মুসলিম সহপাঠীদের রমজান মাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে অনেক কিছু জানতে পারি। প্রথম দিকে খাবার ও পানীয় সম্পূর্ণ পরিহার করে সারা মাসের দিনেরবেলা কাটানো আমার কাছে খুবই কঠিন মনে হয়। কারণ তখনও ইসলাম সম্পর্কে আমার অন্তরে কোনো ধারণা ছিল না।’

নিজের জীবনের মোড় পরিবর্তনের ঘটনা সম্পর্কে বাসকালা জানান, ‘বর্তমান স্বামীর সঙ্গে তখন আমার পরিচয় হয়। ভবিষ্যত জীবন নিয়ে তাঁর সঙ্গে আমি আলাপ করি। এ সময় সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে বলল, তাঁরা মুসলিম হিসেবে বড় হবে। তখন থেকে আমি ইসলাম বিষয়ে জানতে পড়াশোনা শুরু করি। কোরআন পাঠ করি। নিত্য-নতুন বৈজ্ঞানিক বিষয়াবলি জানতে পেরে অভিভূত হই। কোরআনে বর্ণিত দুই সমুদ্রের মিলন ও উভয়ের মধ্যে অদৃশ্য বাঁধের কথাটি পড়ে খুবই অবাক হই। এর আগে কখনো তা নিয়ে এত গভীর চিন্তা করিনি। তাছাড়া সুরা হাদিদ আমার মধ্যে প্রবল প্রভাব বিস্তার করে।’

আমেরিকার মেক্সিকোর বাসিন্দা মারিয়া জানান, ‘মুসলিম হওয়ার পর প্রথম বছর থেকেই আমি রোজা রাখছি। আমার জন্য রোজা রাখা খুবই সহজ ছিল। রোজার কল্যাণের বিষয়ে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। তাই আমি সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম।’ নিজের ইসলাম গ্রহণের কথা উল্লেখ করে মারিয়া বলেন, ‘রোজা রাখা নিয়ে আমার কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না। কিন্তু পরিবার আমাকে একজন মুসলিম হিসেবে গ্রহণ করবে কিনা, তা নিয়ে খুবই হতাশায়গ্রস্ত ছিলাম।’

রোজা রাখা নিয়ে মারিয়া আরো জানান, ‘আমার দৃষ্টিতে রোজা রাখা কঠিন নয়। তাই মুসলিম হওয়ার পর প্রথম দিন থেকেই রোজা রাখা শুরু করি। শুরুতে একজন মুসলিম নারী হিসেবে হিজাব পরায় আমি অভ্যস্ত ছিলাম না। কিন্তু ধীরে ধীরে তা শুরু করি। কিন্তু প্রথম বছর থেকে রোজা রেখেছি। মুসলিম হওয়ার ৮ মাসের মধ্যে আমার মেয়েরাও ইসলাম গ্রহণ করে।’

সূত্র : আল জাজিরা

Advertisement