Homeসব খবরজেলার খবরআল-আমান বাহেলা খাতুন মসজিদে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করলো কর্তৃপক্ষ

আল-আমান বাহেলা খাতুন মসজিদে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করলো কর্তৃপক্ষ

বাংলাদেশের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ইসলামি স্থাপনা, সিরাজগঞ্জের বেলকুচির আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদে বুধবার (১৯ মে) থেকে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, গত ২ এপ্রিল মসজিদটি জু্ম্মার নামাজের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। উদ্বোধনের পর মসজিদটির অনন্য স্থাপত্যশৈলী দেশ ও বিদেশে ব্যাপক প্রসংশিত হয়।

প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদটি দেখার জন্য হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করে। অনেকেই আসেন এখানে নামাজ পরতে। তবে বেশ কিছুদিন যাবৎ সোশাল মিডিয়ায় মসজিদের ভেতরের ও বাইরের কিছু ছবি দেখা যাচ্ছে যেখানে নারী-পুরুষের অযাচিতভাবে সময় কাটানো ও বিনোদনের স্থান হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদে মাইকিং করে নারীদের প্রবেশে নিষেধ করা হচ্ছে, নিরাপত্তা কর্মীরাও নারীদের প্রবেশ না করার বিষয়টি কঠোর ভাবে তদারকি করছেন। নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নারীদের নামাজের স্থান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মসজিদের দ্বিতীয় তলাটিও বন্ধ করে রাখা হয়েছে, সেখানে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ দর্শন করতে রাজশাহী থেকে হাইস মাইক্রো ভাড়া করে আসা ৭ সদস্যের একটি পরিবার জানায়, আমরা অনেক আকাঙ্খা নিয়ে এখানে এসেছিলাম। আমরা দৃষ্টিনন্দন ও আলোচিত এই মসজিদে নামাজ আদায় করবো। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের ফলে আমরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি।

শাহজাদপুরে একজন নারী দর্শনার্থী জানান, কোন হাদিসে এমন নেই যে নারীরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় যদি এখানে কোন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তার দায় মসজিদ কর্তৃপক্ষের। সাধারণ নারী মুসল্লীদের কেন নামাজে বাধা দেওয়া হবে।

আল-আমান বাহেলা খাতুন মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, নারী পুরুষের অবাধ বিচরণ ঠেকাতে ও মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য নারীদের নামাজের স্থান বন্ধ করা হয়েছে। কোন নারী মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না, তার মসজিদের বাইরে থেকে নির্ধারিত দুরত্বে থেকে মসজিদ দেখতে পারবে না। এমনকি তারা মসজিদকে কেন্দ্র করে ছবি তুলতেও পারবে না। তিনি জানান, পরিস্থিতির উন্নতি হলে কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মুকুন্দগাতী গ্রামের মোহাম্মদ আলী সরকার বেলকুচি পৌরভবন সংলগ্ন দক্ষিণে আড়াই বিঘা জমির ওপর তার ছেলে আল-আমান ও মা বাহেলা খাতুনের নামে আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তিনি তার নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করে মসজিদটি নির্মাণ করেন। এটি নির্মাণে সময় লেগেছে চার বছর। শুরু থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪৫ শ্রমিক কাজ করেছেন।

Advertisement