গতকাল কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন। আমরা হবুহু তাঁর স্ট্যাটাসটি তুলে ধরছি।
কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর বলেন, ‘আম্মা বলতেন তুই এতো কথা বলিস, একদিন ফুটপাতে মলম বেচবি। আম্মাকে বোঝাতে পারতাম না আমার সঠিক যুক্তিটা। তিনিও সামাজিকতা রক্ষার্থে আমার কথার আমল দিতেন না। যৌক্তিক বক্তব্যকে ক্রমাগত আমলে না আনাতে আমি বেয়াদব হয়ে গেছি। ও প্রিয়া পপুলার হওয়ার পরে গুলিস্তানে মলম বিক্রেতার টংয়ে নিজের গান শুনে আম্মাকে ফোনে বলেছি আপনার কথাই সঠিক আম্মা। আমি মলম না বেঁচলেও কেউ কেউ আমার গান বাজিয়ে সেটা বিক্রি করছে, এতেই আমি একধরনের মলম বিক্রেতাই হয়ে গেলাম। আম্মা কষ্ট পেয়ে বললেন এভাবে তোমাকে বলিনি বাবা। আমার ভাগ্যটাই উল্টোস্রোতে চলে, ভালবাসতে গেলে অপমানিত হই, রিয়্যাক্ট করলে মানুষ ভাবে আমি ঔদ্ধ্যতপূর্ন আচরন করছি। সরল সত্য ধারন করতে গিয়ে তিরষ্কার পাওয়া দিয়েই আমার জীবনের ইনিংস শুরু।’
‘খেলাধুলা শুরু করলাম, সেখানেও যৌক্তিক কথাগুলোকে আমার উদ্ধত আচরন হিসেবেই ধরা হলো। বারবার সহঅধিনায়ক থেকেই গেলাম, বেশী কথার ফলাফলে কখনোই জেলা দলের বয়স লেভেলে অধিনায়কত্ব পাইনি। ঠেকে থাকিনি, কুমিল্লা জিলা স্কুল আর ভিক্টোরিয়া কলেজের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সফল অধিনায়ক হতে পেরেছি যোগ্যতা বলেই। কেন আমাকে তারা পছন্দ করতোনা জানিনা, তবে আমার মেধা পরিশ্রম আর একাগ্রতার সফলতায় কষ্টকে কষ্ট মনে করিনি। আমাকে কেউ একজন বলেছিলেন তোমাকে কেউ বুঝবেনা, আর আমি অবুঝের মত বোঝানোর চেষ্টা করতে করতে নিজেই অবিশ্বাসী হয়ে গেলাম। এদেশে অপরাধ প্রমানের আগে শাস্তি হয়ে যায়, পজিটিভ মানসিকতা নষ্ট হওয়ার জন্য আর কোন উপাদান লাগেনা। একরোখা বলুক আর বেয়াদব বলুক, প্রমান করার জন্য মুখোমুখি হবার মত সাহসী লোক পাইনি। চেনা বিশ্বাসঘাতকদের নিজেই আপন করেছি, অন্য কাউকে দোষ দেয়ার সুযোগও নেই। আর দোষারোপের চর্চায় অনন্ত সময় ব্যয় হয়, আমার অতো সময় নেই। তবে মনের ক্ষার মিটানোর জন্য মাঝেমধ্যে ওম দেয়া মুরগীর মত কককককক করতেই থাকি।’
‘কখনোই বলিনি আমি খুব ভাল মানুষ। নিজের করা অসংযত কাজগুলোর দায় স্বীকার করে গেছি বারবার। আমার কেন সব বিষয়ে এতো কথা বলা কিংবা কোন কোন বিষয় চেপে যাওয়া !! মানুষের কথা শুনতে গেলে প্রতিদিনের সহস্র ইস্যু নিয়ে লিখতেই হবে। আমি আমার মনের কথা বলি নিজের ফেসবুক ওয়ালে, এখানেও জ্ঞানদাতা হাজির। আমাকে আসলে কেউ দেখতে পারেনা, হিন্দুও না মুসলমানও না। আওয়ামী লীগও না বিএনপি ও না। যার পক্ষে লেখা যায় তিনি খুশী, বিপক্ষে গেলে তো নসিহতের শেষ নাই। দুনিয়ায় অবস্থান করা বেহেস্তের ঠিকাদারদের কাছে গায়ক হিসেবে আমি জাহান্নামী, আচ্ছা গান না শুনলে তারা কিভাবে বুঝে আমি গায়ক !! তাহলে তারা গান শুনে কিভাবে, কোন মাধ্যমে !! আমার কাজ ধর্মীয় অনুশাসনে এতোই ঘৃনিত হলে আপনি আশেপাশে ঘুরেন কেন মশাই ! আমি তো শুধু মহান আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করবো, আপনার কাছে নয় কখনোই। আসুন মুখোমুখি বসি উন্মূক্ত মিডিয়ায়, আলোচনায় সফল হলে সঠিক উপায়ে আমাকে সমাজচ্যুত ধর্মচ্যুত করে দিন, মেনে নিবো।’
‘এই ঈমানী জোর আপনার নেই, কারন আপনার ঘরের ভিতর আমার অস্তিত্ব বিরাজ করছে। এখন পর্যন্ত বুঝতেই পারলাম না ফেসবুক ইন্টারনেট হারাম না হালাল। এই গুগলে তো সবই উন্মূক্ত, তাহলে রক্ষনশীল মন্তব্যকারী ভদ্রলোকেরা কেন বোঝেন না এটা শয়তানী জায়গা ! শিক্ষাদীক্ষা আমারও আছে, আপনার শিক্ষাকেও সম্মান করি। জোর করে মানাতে পারবেন না আমাকে, আমিও জোর করিনা। আসুন আনন্দে থাকি।
ভালবাসা অবিরাম…’