Homeধর্মঅপরাধ রোধে যে পাঁচ অঙ্গের নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ

অপরাধ রোধে যে পাঁচ অঙ্গের নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ

পাঁচটি অঙ্গ সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এবং শরিয়তসম্মতভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে বহু গুনাহ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বিশেষভাবে ব্যভিচার রোধে এই পাঁচ অঙ্গের নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো হলো—

১. চোখ ও দৃষ্টিশক্তি: চোখের হেফাজত ও দৃষ্টি রক্ষা করা লজ্জাস্থানকে রক্ষা করার শামিল। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের চোখ নিম্নগামী করো এবং লজ্জাস্থান হেফাজত করো।’ (মুসনাদ আহমাদ : ৫/৩২৩)

হঠাৎ কোনো নিষিদ্ধ বস্তুর ওপর চোখ পড়ে গেলে তা তড়িঘড়ি ফিরিয়ে নিতে হবে। দ্বিতীয়বার কিংবা একদৃষ্টে ওদিকে তাকিয়ে থাকা যাবে না। রাসুল (সা.) আলী (রা.)-কে বলেন, ‘হে আলী, বারবার দৃষ্টি ক্ষেপণ কোরো না। কারণ হঠাৎ দৃষ্টিতে তোমার কোনো দোষ নেই। তবে ইচ্ছাকৃত দ্বিতীয় দৃষ্টি অবশ্যই দোষের।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২১৪৯; তিরমিজি, হাদিস : ২৭৭৭)

২. মন ও মনোভাব: মানুষের মন ন্যায়-অন্যায়ের অন্যতম উৎস। মানুষের ইচ্ছা, স্পৃহা, আশা ও প্রতিজ্ঞা মনেরই সৃষ্টি। সুতরাং যে ব্যক্তি নিজ মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে সে নিজ কুপ্রবৃত্তির ওপর বিজয় লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি নিজ মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না নিশ্চিতভাবে সে কুপ্রবৃত্তির শিকার হবে। পরিশেষে তার ধ্বংস একেবারেই অনিবার্য। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘চোখের অপব্যবহার ও অন্তরে যা গোপন আছে সে সম্পর্কে তিনি (আল্লাহ) অবগত।’ (সুরা : মুমিন/গাফির, আয়াত : ১৯)

৩. মুখ ও বচন: কখনো অযথা কথা বলা যাবে না। অন্তরে কথা বলার ইচ্ছা জাগলেই চিন্তা করতে হবে, এতে কোনো ফায়দা আছে কি না? যদি তাতে কোনো ধরনের ফায়দা না থাকে তাহলে সে কথা কখনো বলবে না। আর যদি তাতে কোনো ধরনের ফায়দা থেকে থাকে তাহলে দেখবে, এর চেয়ে আরো লাভজনক কোনো কথা আছে কি না? যদি থেকে থাকে তাহলে তা-ই বলবে—অন্যটা নয়। কেননা পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তার জন্য তৎপর প্রহরী তার কাছেই আছে।’ (সুরা কাফ, আয়াত : ১৮)

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, কোনো বান্দার ঈমান ঠিক হয় না, যতক্ষণ না তার অন্তর ঠিক হয়। তেমনি কোনো বান্দার অন্তর ঠিক হয় না, যতক্ষণ না তার মুখ ঠিক হয়।’ (মুসনাদ আহমাদ : ৩/১৯৮)

৪. লজ্জাস্থানের হেফাজত: মানুষের অধিকাংশ অপরাধ মুখ ও লজ্জাস্থানের মাধ্যমে সংঘটিত হয়। তাই এই দুই অঙ্গের নিয়ন্ত্রণে অধিকাংশ অপরাধ কমে যাবে। সাহাল বিন সাআদ আস সাআদি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে দুই চোয়াল ও দুই উরুর মধ্যবর্তী স্থানের নিরাপত্তা দেবে আমি তাঁকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস নং : ৬৪৭৪)

৫. পদ ও পদক্ষেপ: অর্থাৎ সওয়াবের কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে পদক্ষেপণ করা যাবে না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আমি আজ (কিয়ামতের দিন) তাদের মুখ মোহর করে দেব, তাদের হাত কথা বলবে আমার সঙ্গে এবং তাদের পা সাক্ষ্য দেবে তাদের কৃতকর্মের।’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৬৫)

এ আলোচনা থেকে আমরা সহজে এ কথাই বুঝতে পারলাম যে কোনো ব্যক্তি তার চোখ, মন, মুখ ও পা সর্বদা নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখলে তার থেকে কোনো গুনাহ বিশেষভাবে ব্যভিচার প্রকাশ পেতে পারে না।-কালের কণ্ঠ অনলাইন।

Advertisement