কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে সুপারির বাজারদর কম থাকায় হতাশ বেতাগীর কৃষক, গৃহস্থ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বরগুনার বেতাগীতে এ বছর সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সুপারির ফলন ভালো হয়। এ উপজেলায় একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের ছোট-বড় মিলিয়ে বিভিন্ন বাড়ির আঙিনা ও বাগানে প্রায় আট হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে।
এ বছর এসব বাগানের সব গাছেই সুপারির ভালো ফলন ধরেছে। এতে এ বছর ১০ কোটি টাকার সুপারি বিক্রি হবে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই সুপারি কিনে ৬০ শতাংশ পানিভর্তি পাত্রে ভিজিয়ে রাখেন। ৪০ শতাংশ সুপারি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ ও রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। এ বছর কাঁচা-পাকা সুপারির দাম কম হওয়ায় হতাশ কৃষক, গৃহস্থ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
কৃষক কৃষ্ণকান্ত ঘরামী বলেন, বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী সুপারির দাম কম। এ বছরের তুলনায় গত বছর আশ্বিন-কার্তিক মাসের দিকে দাম ভালো ছিল। কিন্তু এ বছর গত এক সপ্তাহ থেকেই কম দামে বিক্রি করছেন চাষি, গৃহস্থ ও ব্যবসায়ীরা। উপজেলার পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোতে সুপারি বিক্রির প্রধান বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বেতাগী পৌর শহরের বাজার, ঝোপখালী বাজার, পুটিয়াখালী, রানীপুর, গড়িয়াবুনিয়া, বিবিচিনি, লক্ষ্মীপুরা, দেশান্তরকাঠী, বাসণ্ডা পুলেরহাট, হোসনাবাদ, জলিশা, মোকামিয়া, সোনার বাংলা, কাজির হাট, বলইবুনিয়া, কাউনিয়া, চান্দখালী, মিরেরহাট, কুমড়াখালী, ভোড়া কালিকাবাড়ি, সড়িষামুড়িসহ উপজেলার ৪০টির বেশি বিভিন্ন হাট-বাজারে চলছে সুপারি কেনা-বেচার জমজমাট ব্যবসা।
এসব বাজার থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কিনে পাইকারি ও আড়ৎদারদের কাছে বিক্রি করছেন। এ ছাড়া এ মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এসে তাদের চাহিদামতো স্থানীয় পাইকারদের কাছ থেকে সুপারি কিনে নিচ্ছেন। এসব বাজারে এ বছর এক কুড়ি (২১০টি) সুপারি ১৭০ টাকা, মানভেদে ২৩০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছরের চেয়ে ৭৫ থেকে ১০০ টাকা কম। বেতাগী পৌরসভার বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভূদেব সমাদ্দার বলেন, এ বছর সুপারির ভালো ফলন হলেও গত বছরের তুলনায় বাজারে দাম কম।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইছা বলেন, এ বছর উপজেলার সুপারি বাগানের মালিকরা সঠিক সময়ে সঠিক পরিচর্যা করায় সুপারির এমন ফলন হয়েছে। এ উপজেলায় ২৫০ থেকে ৩০০ মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর বাজারমূল্য ১০ কোটি টাকার বেশি হবে।