Homeসব খবরজেলার খবরগাছ আলু চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা

গাছ আলু চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে কন্দাল জাতীয় গাছ আলু চাষে ব্যাপক সফলতার স্বপ্ন দেখছেন দৌলতদিয়ার কৃষক হুমায়ন আহমেদ ও স্থানীয় চাষিরা। সবজি হিসেবে গোল আলুর চেয়ে দেড় থেকে দুই গুণ বেশি উৎপাদন হওয়া পুষ্টি ও ঔষধি গুনে ভরপুর এই আলু। তিনি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ইতিমধ্যে তিনি স্বল্প আকারে চাষ করে ভালো ফল পাওয়ায় এবার তিনি অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ২৮ শতক জমিতে বাণিজ্যিকভাবে গাছ আলুর চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তার ফলন দেখে স্থানীয় কৃষকরা এই আলু চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

সরজমিনে মাচান পদ্ধতিতে চাষ করা ওই গাছ আলুর ক্ষেত পরিদর্শন কালে ছোট বড় মাঝারি সাইজের গোলাকৃতির ধুসর বর্ণের আলু বাঁশের মাচানে ঝুলতে দেখা যায়। এ সময় কৃষক হুমায়ন আহমেদ ওই আলুর গুণাগুণ চাষ পদ্ধতি ও উৎপাদনের বিষয়ে আগামীতে তার এলাকার অন্য কৃষকদের মধ্যে বিপ্লব ঘটার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, গাছ রোপনের পর মাচানে ওঠার জন্য গাছের গোড়ায় বাঁশের কনচি অথবা খরচি পুতে দিতে হয় যাতে গাছের লতাগুলো কনচি বা খরচি বেয়ে মাচানে উঠতে পারে। তাছাড়া যেকোন গাছের গোড়ার একটু দূরে রোপন করলে আস্তে আস্তে ওই গাছ বেয়ে উপরে উঠে আলু ধরতে থাকে। আলু গাছ রোপনের মাস তিনেক পর থেকেই গাছে আলু ধরতে শুরু করে। গাছের ডগায় ও মাটির নিচে গোড়ায় আলু হয়ে থাকে। প্রায় সারা বছরই আলু ধরে। প্রতিটি গাছে প্রতি সাজে আট থেকে ১০ কেজি আলু পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, এই আলু চাষে তেমন সার ওষুধ ব্যবহার বা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। হাল্কা ছাইযুক্ত বেলে দোঁয়াশ মাটিতে পর্যাপ্ত রোদ ও আলো বাতাস পায় এমন মাটিতে এই আলুর ফলন ভালো হয়। তবে উপযোগী মাটি হলে ছায়াযুক্ত স্থানেও এ আলুর ফলন হয়ে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে ফলন ঠিক রাখতে সেচ দিলে ভালো হয়।

কৃষক হুমায়ন আহমেদ তার মাচানে ঝুলতে থাকা আলু দেখিয়ে আরো বলেন, আমি নিজে খাবার হিসেবে এই আলু ব্যবহার করে জানতে পেরেছি খাবারের সাথে নিয়মিত এই আলু খেলে হার্ট ভালো হবে এবং শরীরে ক্যালসিয়াম ঘাটতি পূরণ হবে। তাছাড়া খাবার হিসেবে গোল আলুর চেয়ে দেড় থেকে দু’গুন ফলন ও পুষ্টিমান বেশি। বাজারে দাম ভালো পাওয়া যায়।

জানা গেছে, প্রায় বিশ বছর যাবত হুমায়ন আহমেদ কৃষি কাজ করেন। গত বছর থেকে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আধুনিক পদ্ধতিতে নানা ধরনের সবজি ও ফসলের পাশাপাশি গাছ আলুর আবাদ শুরু করেছেন।

সফল কৃষক হুমায়ন আহমেদ এ বছর করলা, শিম, লাউ, বেগুনসহ প্রায় ২০ প্রকার শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। এছাড়া তিনি আঙ্গুর, কমলাসহ নানা জাতের ফলের চাষও করেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো: খোকন উজ্জামান ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো: মাহফুজুর রহমান বলেন, গোয়ালন্দে বাণিজ্যিকভাবে গাছ আলু চাষ করে কৃষকদের সফল হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে এই আলু অনেকেই চাষ করছেন। গোল আলুর অপেক্ষা আলুর উৎপাদন খরচ অনেক কম। তাছাড়া পুষ্ট ও ঔষধি হিসেবে গোল আলুর চেয়ে দেড় থেকে দুইগুণ বেশি। কোনো কৃষক চাষ পদ্ধতি জানতে চাইলে সার্বিক সহায়তা করা হবে।-নয়া দিগন্ত

Advertisement